জাফরান চাষে সফল কুমিল্লার সন্তান শেকৃবি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন
ইমতিয়াজ আহমেদ জিতু।।
শীতপ্রধান অঞ্চলের ফসল জাফরান বাংলাদেশে চাষাবাদ হচ্ছে। শুনতে বিষয়টি অসম্ভব মনে হলেও তা সম্ভব করেছেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক কুমিল্লার সন্তান অধ্যাপক আ ফ ম জামাল উদ্দিন। বাংলাদেশ গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চল হওয়ায় জাফরানের চাষাবাদ এখানে সম্ভব নয়। কিন্তু বর্তমানে দেশের আবহাওয়ায় জাফরান চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন এই শিক্ষক।
জানা যায়, আলো-আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত কক্ষে জাফরানের ফুল ফোটাতে সক্ষম হয়েছেন গবেষক । আমাদের দেশের উন্মুক্ত পরিবেশে জাফরানের চাষ বেশ ব্যয়বহুল। সে কারণে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত কক্ষে উৎপাদন করা হয়েছে।
কিন্তু এই পদ্ধতিতে আবহাওয়াজনিত কারণে ফসল মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কম। আর বছরে একাধিক বার ফলন ওঠানো যাবে।
অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, প্রচলিত পদ্ধতিতে বাংলাদেশে জাফরান উৎপাদন করা সম্ভব না। কিন্তু আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি অ্যারোপনিক্স পদ্ধতিতে (বাতাসের মাধ্যমে গাছের খাদ্য উপাদান সরবরাহ) একটা ছোট আকারের ঘরের মধ্যেই এক হেক্টর সমপরিমাণ জায়গার জাফরান উৎপাদন করা সম্ভব। কারণ এই পদ্ধতিতে রোপণ করা গাছের ট্রেগুলো উলম্বভাবে সাজিয়ে রাখা হয়। জায়গা লাগে কম।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী জাফরানের বিপুল চাহিদা রয়েছে। বিশ্ববাজারে প্রতি গ্রাম জাফরানের দাম চার ডলারের মতো। সে হিসাবে প্রতি কেজি জাফরানের দাম পড়ে তিন লাখ টাকার বেশি।
উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া সাপেক্ষে বাংলাদেশেই এর লাভজনক বাণিজ্যিক উৎপাদন সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
এই গবেষক জানান, গত বছর জাপান থেকে জাফরানের পাঁচ শতাধিক করম আনান তিনি। প্রথমে সেগুলো ফ্রিজে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রেখে রোপণের উপযোগী করা হয়।
পরে তা ঘরের মধ্যে প্লাস্টিক ও টিনের তৈরি ট্রেতে রোপণ করা হয়। দেখা যায়, প্রায় সবগুলো গাছেই ফুল এসেছে।
বাংলাদেশে আমরা যতটুকু সফলতা অর্জন করেছি, তাতে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখন বাণিজ্যিক উৎপাদনেও যাওয়া যাবে বলেও তিনি জানান।
আ ফ ম জামালউদ্দিন (মাসুম) এর পিতা মরহুম আকরাম আলী চট্টগ্রাম বিভাগীয় কৃষির উপ পরিচালক ছিলেন। আ ফ ম জামালউদ্দিন ৭ ভাইয়ের মধ্যে ৬ষ্ঠ -তম। সবার ছোট ভাই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি’র একান্ত সচিব। সবার বড় ভাই বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। বাকী ভাইয়েরা ব্যবসায়ী।
তিনি কুমিল্লা নগরীর দক্ষিণ বাগিচাগাঁও এলাকার রায়তলা সরকার বাড়ির বাসিন্দা।
তিনি কুমিল্লা জিলা স্কুল,
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তারপর জাপানে ২ বার পিএইচডি এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় যেমন কাগোসিমা, জিফু ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা করেন। ।