টর্নেডোর আঘাতে অর্ধশত ঘর- বাড়ি বিধ্বস্ত, আহত ৫
বড়ুরা প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ইটাখোলা গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আকস্মিক টর্নেডোর আঘাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৩০ সেকেন্ড স্থায়ী এ ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ১৭টি পরিবারের বসতঘর, গোয়ালঘর, রান্নাঘরসহ প্রায় ৫০টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় ঘরের চাপায় পড়ে ঘরের ভেতরে থাকা নারী শিশুসহ আহত হয়েছেন ৫ জন। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার চিতড্ডা ইউনিয়নের ইটাখোলা নামক গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া টর্নেডোর আঘাতে পৃথক পৃথক ৮টি বাড়ির ১৭টি পরিবারের বসতঘর, গোয়াল ঘর, রান্নাঘরসহ ৫০টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় ঘর চাপায় পড়ে আহত হয়েছেন নারী শিশুসহ ৫ জন। আহতরা হলেন পানমতি বেগম (৬৪), রিমা আক্তার (৩৫), আসমা আক্তার (১০), হাবিবা আক্তার (৫)। আহতরা স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রসহ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এছাড়াও টর্নেডোর আঘাতে ভেঙ্গে গেছে এসব বাড়ির গাছপালা। ছিঁড়ে গেছে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের লোকজনেরা বিধ্বস্ত ঘরে কিংবা আশপাশের আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মধ্যে পানমিত বেগম, গিয়াস উদ্দিন, জসিম উদ্দিন, শাহজাহান, খিজির আহাম্মেদ, রুহুল আমিন, শিরিনা আক্তার, মিজানুর রহমান, আবদুল খালেকসহ অনেকে জানান, মাত্র ৩০ সেকেন্ড স্থায়ী টর্নেডোর আঘাতে তাদের বাড়িঘর, গাছগাছালি সবই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কেউ কেউ বিধ্বস্ত বাড়িঘরে কোন রকমে মাথা গুঁজে আছেন।
আবার কেউ কেউ আশপাশের আত্মীয় স্বজনদের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। এতে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে তাদের। নতুন ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য তাদের সেই সামর্থ্য নেই বলেও জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থরা।
এ দিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুক এবং ইউপি মেম্বার মো. সোলাইমান জানান, টর্নেডোর আঘাতে ঘরবাড়ি, গাছগাছালিসহ প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার প্রত্যেককে ১০ কেজি করে চাউল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল এবং তেলসহ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জানান, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদেরকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য তিনি স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন।
অপরদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আনিসুল ইসলাম এবং বরুড়া থানা অফিসার ইনচার্জ ইকবাল বাহার মজুমদার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।