অতীতের অভিজ্ঞতা পাথেয় হোক আগামীর।।

অতীতের অভিজ্ঞতা পাথেয় হোক আগামীর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হলে থাকা থেকে শুরু করে একই ডিপার্টমেন্টে অর্থনীতি নিশে পড়াশোনা করা,অনেক সময় কাঠানো আমার প্রিয় বন্ধু মিজানুর রহমান এর লেখাটি সকলের কাছে তুলে ধরা হলো।সেই সাথে বন্ধুসমীপেষু ৩০তম বিসিএসের সকলের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইল।

ডেস্ক নিউজ।।

ভাবতে অবাক লাগছে। এই তো সেদিনের কথা। কিন্তু দেখতে দেখতে নয়টি বছর কেটে গেছে কর্মজীবনের। ১০ বছরে পা রেখেছি একদিন আগে। ভাবতেই ভালোও লাগছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হলো এ বছর। অর্ধশত বছর বয়সী স্বাধীন দেশের সিভিল সার্ভিসে নয় বছর থাকতে পারায় যে কেউ আমাকে সৌভাগ্যবানদের দলে ফেলবেন। সত্যিই নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। একেকবার ভাবি যদি এই দেশ স্বাধীন না হতো, পরাধীনতা শৃঙ্খল ভাঙার শপথ না নিতেন আমাদের পূর্বসূরী বীরেরা, তাহলে এই সার্ভিসে যুক্ত হওয়ার সুযোগ আমি পেতাম না। পেতাম নাম জনগণের সেবক হওয়ার সুযোগও। এ কথা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

এই দীর্ঘ পথের বেশিরভাগ সময় আমার কেটেছে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে। প্রান্তিক মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। শীতেররাতে ঘরে ঘরে উষ্ণতা ছড়াতে কম্বল বিতরণ কিংবা বন্যার সময় পানিবন্দী মানুষের হাতে ত্রাণ-উপহার তুলে দিয়ে যে তৃপ্তি পেয়েছি, তা ভোলার নয়। ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করতে গিয়ে জানতে পেরেছি বানভাসী মানুষ ত্রাণ চায় না, চায় টেকসই বাঁধ। যে বাঁধ জলের কঠিন গ্রাস থেকে ঠেকাবে তাদের।বানের জল থেকে দেবে স্থায়ী সমাধান।

জেলা উপজেলা কীভাবে পরিচালিত হয় তা দেখেছি নিবিড়ভাবে। খুব কাছ থেকে। অভিজ্ঞতার ঝুলিতে তুলেছি কতশত ঘটন-অঘটন। যা সমৃদ্ধ করেছে আমার জানাশোনার পরিধিকে। অধিত বিদ্যার চেয়ে বাস্তবের জ্ঞান যে কতটা গুরুত্ববহ জেনেছি তাও। তবে সবই যে ভালো অভিজ্ঞতার পালক তা তো নয়, মন্দ পালকও যুক্ত হয়েছে প্রায় এক দশকের কর্মমুকুটে। এই সব অভিজ্ঞতাই সামনের দিনের পাথেয়।

সেবাকে আরো সহজ করে কীভাবে মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দেওয়া যায়, তা নিয়ে আরও কাজ করার সুযোগ আমাদের রয়েছে। বিলেতে (ইংল্যান্ডে) উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ আমার চোখ খুলে দিয়েছে আরও। সেই সুবাদে জেনেছি বিলেতি উন্নয়ন ও কাজের নানান খুঁটিনাটি। প্রত্যাশা করি, আগামীর কর্মজীবনে সেই অধিত ও দেখে অর্জিত বিদ্যার সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের মানুষের জন্য কাজ করব। দেশের উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখব। আর তা সম্ভব হবে সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই।

প্রজাতন্ত্রের একজন ক্ষুদ্র কর্মচারী হিসেবে মানুষের সেবারব্রত নিয়েই শুরু করেছিলাম সিভিল সার্ভিসের কর্মজীবন। মানুষের জন্য ভালোবাসার যে মন নিয়ে যাত্রা করেছিলাম, তা দিনকে দিন আরও বেড়েছে বৈ কমেনি। দেশের কল্যাণে কাজ করার মানসিকতাও বদলায়নি এতটুকু। বরং আর নিবিড়ভাবে দেশ গড়ার কাজে আমার ক্ষুদ্র পরিসর থেকে বড় স্বপ্ন দেখি। এজন্য সবার আর্শীবাদ ও শুভ কামনা আমার সতত প্রত্যাশা।

১০ বছরে পদার্পণের এই শুভক্ষণে আমার প্রিয় ৩০তম বিসিএসের সকল বন্ধু-বান্ধবকে অভিনন্দন জানাই। দেশের সকল ক্ষেত্রের সুষম উন্নয়নের সহায়ক হোক ৩০ ব্যাচের চৌকস, দক্ষ, মেধাবী, দেশপ্রেমী ও পরিশ্রমী সহযোদ্ধারা, প্রত্যাশা। মহামারি করোনার কালো ছায়া থেকে মুক্ত হোক বিশ্ব, মুক্ত হোক প্রিয় স্বদেশ।

লেখক: সরকারি কর্মকর্তা, বিসিএস (প্রশাসন) ৩০তম ব্যাচ।

 

আরো পড়ুনঃ