কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন কলেজের একাদ্বশ শ্রেণীতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়ের অভিযোগ

বিশেষ প্রতিনিধি।।

কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলার কলেজের একাদ্বশ শ্রেণীতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কুমিল্লার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অমান্য করে সরকারী ও বেসরকারী কলেজে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে একাদ্বশ শ্রেণীতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় করা হচ্ছে। এতে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের অতিরিক্ত ভর্তি ফি’র টাকা জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবের ফলে যেখানে গ্রামের গরীব ও সাধারণ মানুষ সংসার চালানোই দুষ্কর হয়ে পড়েছে; সেখানে ছেলে-মেয়েদের অতিরিক্ত ভর্তি প্রদান করা অন্ত্যন্ত কষ্টের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,রূপসী বাংলা কলেজ, রেসিডেনসিয়াল কলেজ, অজিতগুহ কলেজ, ইবনে তামিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, মহানগর কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, কুমিল্লা বিজ্ঞান কলেজ, চান্দিনা রেদোয়ান অহামেদ কলেজ, কুমিল্লা কর্মাস কলেজ, বিমান বন্দর মুন্সি ফারুক অহামেদ কলেজ,কুমিল্লা সিটি কলেজ, চৌয়ারা আর্দশ ডিগ্রি কলেজ উপজেলার কালীকাপুর আবদুল মতিন খসরু সরকারী কলেজ, বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজ, নিমসার জুনাব আলী কলেজ, সোনার বাংলা কলেজ, পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজে সরকারী নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ছাত্র- ছাত্রীদের কাছ বিভিন্ন কলা-কৌশলে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে। সরকারী এক পরিপত্রে উল্লেখ রয়েছে যে, একাদ্বশ শ্রেণীতে ভর্তি নীতিমালায় অনুযায়ী গ্রামাঞ্চলে সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি বাবদ ১ হাজার ৫০০টাকা আদায় করতে পারবে। কিন্ত মাঠ পর্যায়ে দেখা যায়, প্রতিটি কলেজ ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ২হাজার ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার ৫০০টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। এতে গ্রামের অসহায় ও গরীব ছাত্র-ছাত্রীরা লেখা-পড়া থেকে ঝড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রছাত্রীরা জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক অতিরিক্ত ভর্তি ফি প্রদান করতে বাধ্য হচ্ছি। লেখা-পড়া করতে হলে তাদের ধার্য্যকৃত ফি প্রদান করতে হবে। আমাদের কাছ থেকে আদায়কৃত ভর্তি ফি’য়ের জন্য কোন প্রকার
আদায় রশিদ প্রদান করা হচ্ছে না।

এই বিষয়ে কালিকাপুর আবদুল মতিন খসরু সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মফিজুল ইসলাম বলেন,সরকারী বিভিন্ন নিয়ম-নীতির কথা বলে এড়িয়ে যান। বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আামদের কলেজে
শিক্ষকের সংকট থাকার কারণে গভনিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভর্তি ফি আদায় করা হচ্ছে।

কালিকাপুর আবদুল মতিন খসরু সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজের দাতা সদস্য এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়ের কারণে এবং অনলাইন ভর্তি পদ্ধতির কারণে এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা স্থানীয় কলেজগুলোতে ভর্তি হতে পারছে না। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। যে কলেজে নিয়ম-নীতি ভঙ্গ করে অতিরিক্ত ফি আদায় করছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত।

বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক ও সোনার বাংলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মোঃ সেলিম রেজা সৌরভ বলেন, সরকারি নিয়ম-নীতি মেনে আমরা ভর্তি ফি আদায় করছি। প্রত্যেক কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ভর্তি ফি আদায়ের রশিদ প্রদান করা কলেজ কতৃপক্ষের দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল মান্নান বলেন, সরকারি নিয়ম-নীতির বাহিরে কেউ ভর্তি ফি আদায় করলে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো.জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, প্রত্যেক কলেজের ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভর্তি ফি আদায়ের বিধান রয়েছে। যদি কোন কলেজ সরকারি বিধি-বিধান লঙ্ঘন করার অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।

আরো পড়ুনঃ