নিজস্ব প্রতিবেদক।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কক্ষে ডেকে লাথি মেরে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়ার হুমকি প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে । শনিবার ( ১৫ অক্টোবর) ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর এলাকার ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম মাস্টারের পক্ষে তার নাতি মোহাম্মদ শাহ আলম খান সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণপাড়া নির্বাহী অফিসার সোহেল রানার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন। এছাড়াও রাস্তা নিয়ে বিচার চাইতে গিয়ে ওই নির্বাহী কর্মকর্তার রোশানলে পড়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা।
লিখিত বক্তব্যে শাহ আলম খান বলেন, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর এলাকায় ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের ব্রাহ্মনপাড়া মৌজার আপ্তাব আলী ৫৯/৮০ নং দলিল মূলে সাবেক ৩৯৭ দাগে ৪৭ শতক ভূমি মুকসদ আলীর নিকট বিক্রি করে। মুকসদ আলী ২৫৬৮/৮৪ নং সাফ কবলা দলিল মূলে ৩৯৭ দাগে ৯.৫০ শতক সম্পত্তি আমির হোসেনের নিকট বিক্রি করে। একই জায়গা ২০১৯/৮৫নং সাফ কবলা দলিল মূলে সাবেক ৩৯৭ দাগে ২.২৫ শতক ভূমি, ২০৮৩/৮৫নং দলিল মূলে ৩৯৭ দাগে ২.২৫ শতক মোট ৪.৫০ শতক ভূমি এবং দক্ষিণ পশ্চিমে পাশে ৬ ফুট ও লম্বায় ৫০ ফুট প্রস্থের একটি রাস্তা সহ আমির হোসেন কাছ থেকে ৩০ বছর আগে একই এলাকার আমেরিকা প্রবাসী আব্দুর রহিম মাষ্টার ৫.১৯ শতক সম্পত্তি ক্রয় করেন এবং ওই সম্পত্তির উপর ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে আব্দুর রহিমের নামে বিএস ৪২৪ দাগে ৪ শতক বাড়ী বাবতে ৯১ নং বিএস খতিয়ান হয়। দীর্ঘদিন ৩০ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও দক্ষিণাংশে ৬ ফুট প্রস্থের রাস্তা আব্দুর রহিমকে বুঝিয়ে দেননি আমির হোসেন। রহিম মাস্টারের দক্ষিণ পশ্চিমে পাশে ৬ ফুট ও লম্বায় ৫০ ফুট প্রস্থের রাস্তা না বুঝিয়ে দিয়ে রাস্তাসহ আমির হোসেন আরো ৫ শতক সম্পত্তি ফজলুল করিমের নিকট বিক্রি করে। ফজলুল করিমের দলিলেও দক্ষিণ পশ্চিমে পাশে ৬ ফুট ও লম্বায় ৫০ ফুট প্রস্থের একটি রাস্তা উল্লেখ রয়েছে।
ওই রাস্তাটি দলিলে উল্লেখ থাকার পরও রাস্তাটি দখল করে ভবন নির্মাণের পায়তারা করছে ফজলুল করিম। এতে আব্দুর রহিম মাস্টারের গংরা ভবন নির্মাণে বাঁধা প্রদান করেন। রাস্তাটি উদ্ধার নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার মিমাংসার করার চেষ্টা করলেও কোন সুরাহা করতে পারেনি।
শাহ আলম খান আরও বলেন- পরবর্তীতে আমরা থানায় মিমাংসার জন্য গেলে ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা তাদেরকে অফিসে ঢেকে নিয়ে মিমাংসা না করে রাস্তা নিয়ে কোন প্রতিবাদ যাতে করি সে জন্য উল্টো হুমকি ধমকি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। পরবর্তীতে নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আব্দুর রহিম মাস্টারের পুত্র হাবিবুর রহমান, জিল্লুর রহমান, আকাশ সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ বিভিণœ হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে আব্দুর খালেক খন্দকার, আব্দুল আলিমসহ স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর খালেক ও আব্দুর আলিমসহ এলাকার লোকদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি এমনকি আনসার দিয়ে তাদেরকে উঠিয়ে নেয়ারও হুমকি দেন। বর্তমানে আব্দুর রহিম মাস্টারের পরিবারের লোকজন নির্বাহী কর্মকর্তার কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানান শাহ আলম খান।
এ বিষয়ে আব্দুল আলিম বলেন- দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত দক্ষিণ পশ্চিমে পাশে ৬ ফুট ও লম্বায় ৫০ ফুট প্রস্থের একটি রাস্তাটি আমরা চলাচল করেছি। কিন্তু আমির হোসেন উক্ত রাস্তাটি দখল করে ফজলুল করিমের নিকট বিক্রি করে ফেলে। এতে করে আমাদেরসহ আব্দুর রহিম মাস্টারগংদের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। এতে আমরা স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের উপর ক্ষেপে যায় এবং আমাকেসহ আমার পিতাকে হুমকি ধমকিসহ হয়রানি করে। আমরা বর্তমানে নির্বাহী কর্মকর্তার কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং উনার বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে আব্দুল খালেক খন্দকার বলেন- রাস্তাটি দীর্ঘদিনের পুরোতন রাস্তা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিভাবে রাস্তাটি নিয়ে নাক গলান তা আমার বুঝে আসে না। এর প্রতিবাদ করায় আমাকে ধরে নিয়ে মারধরের চেষ্টা করে এছাড়াও বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করারও হুমকি দেন এবং লাথি মেরে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিবে বলেও হুমকি দেয়। আমি বর্তমানে নির্বাহী কর্মকর্তার রোশানলে পড়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
অভিযোগের বিষয় ব্রাহ্মণপাড়া নির্বাহী অফিসার সোহেল রানা বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। তিনি আরো বলেন- জায়গা সম্পত্তির বিষয়ে আমার কাছে আসবে আমিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে যেতে পারি।