স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি দায়িত্ব পেয়েছিলেন মো. তাজুল ইসলাম। আজ বুধবার তার দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছর পূর্তি। দুই বছর ধরে সফলতার সঙ্গে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। নভেল করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে। বিগত দিনের কাজের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আগামী দিনগুলোতে আরো গতিশীল থাকতে চান তিনি। প্রতিদিনের সংবাদের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপচারিতায় নিজের কর্মকৌশল সম্পর্কে জানিয়েছেন কুমিল্লার এই কৃতী সন্তান।
টেকসই গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন? মো. তাজুল ইসলাম : সড়ক, সেতু ও বিভিন্ন অবকাঠামো আগে কম খরচে নির্মাণ করা হতো। সেজন্য টেকসই হতো না। আমি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর পরিবর্তনের চেষ্টা করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতি নিয়ে অবকাঠামো নির্মাণে অনেক পরিবর্তন এনেছি। এরমধ্যে ফিজিওলজিক্যাল, হাইড্রোলজিক্যাল ও নেভিগেশন ফ্যাসিলিটি যেন করা হয়, সেগুলো নিশ্চিত করেছি। বাজেটের আকার বাড়িয়েছি। মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রকৌশলীদের নির্দেশ দিয়েছি, যেন বিষয়গুলো মেনে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়।
জনপ্রতিনিধিদের দুর্নীতি মোকাবিলায় কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন কি? মো. তাজুল ইসলাম : করোনাকালে আমাদের জনপ্রতিনিধিরা অনেক কাজ করেছেন। লকডাউনের সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে দিনমজুর, অসহায় গরিবদের মধ্যে নগদ অর্থ ও ত্রাণ বিতরণ করেছি। এ ছাড়া জনপ্রতিনিধিরাও নিজস্ব অর্থায়নে গরিব অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করেছেন। আবার অনেকে ধনীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এলাকার দরিদ্রদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। তবে এ ক্ষেত্রে হাতেগোনা কয়েকজন দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। এমন ঘটেছে মাত্র ৫ শতাংশের ক্ষেত্রে। যারা দুর্নীতি করেছেন, তাদের আমরা ছাড় দিইনি। সাময়িক বরখাস্তসহ আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি।
জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন? মো. তাজুল ইসলাম : ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসতে কাজ শুরু করেছি। এরই মধ্যে তাদের লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্টের (এলজিএসপি) আওতায় নিয়ে আসার কার্যক্রম চলছে। এ প্রজেক্ট নিয়ে আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কয়েকবার বসেছি। আশা করি, সফল হব। এ প্রজেক্টের মাধ্যমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কে কোথায় আছেন, অফিসে নাকি বাইরে আছেন, এগুলো দেখা যাবে। তারা কি অফিস ফাঁকি দিচ্ছেন, নাকি ব্যক্তিগত কাজ করছেন, সেটা এক জায়গায় থেকে মনিটরিং করা যাবে। এ ছাড়া জনপ্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর তার কী কী দায়িত্ব রয়েছে এবং সেগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করবেন, সেগুলো প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জানা যায়। প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এজন্য যে, তারা যেন জনগণের সেবার মান নিশ্চিত করতে পারেন।
মশা নিয়ন্ত্রণে আপনি কী ধরনের ভূমিকা রেখেছেন? মো. তাজুল ইসলাম : ২০১৯ সালে আইইডিসিআর পূর্বাভাস দিয়েছিল, ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব তিন গুণ হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বছরের প্রথম থেকেই মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করি। আগের বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের তিক্ত অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের শুরু থেকেই মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সিটি করপোরেশনকে সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিত চেষ্টায় এডিস মশা ও মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মশার ওষুধ আমদানিতে যে মনোপলি ছিল, তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দুই সিটি করপোরেশনকে প্রয়োজনীয় লোকবল, যন্ত্রপাতি সরবরাহ, ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে নিয়মিত অভিযান, এমনকি জেল-জরিমানার মাধ্যমে নগরবাসীকে সচেতন করা হয়েছে। এ ছাড়া যারা ইচ্ছাকৃত নির্মাণাধীন ভবন পরিষ্কার করেন না, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খাল, নর্দমা ও জলাশয় পরিষ্কারের জন্য সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন নির্দেশ মোতাবেক কাজ করেছে। আর মানুষকে সচেতন করার জন্য টেলিভিশনে টিবিসি (বিজ্ঞাপন) প্রচার করা হচ্ছে। সর্বসাকুল্যে বিগত বছরটি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ছিল। নতুন বছরেও এসব কার্যক্রম চলমান আছে।
বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান? মো. তাজুল ইসলাম : রাজধানীর বাড়ির আঙিনা, রাস্তাঘাট, হাটবাজার, সরকারি-বেসরকারি নির্মাণাধীন বিভিন্ন স্থাপনা, হাসপাতাল, বিভিন্ন স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ জনসমাগম হয়, এমন স্থানে প্রায় প্রতিদিনই দেখা যায় নানা ধরনের বর্জ্য পড়ে আছে। সিটি করপোরেশন এসব বর্জ্য সংগ্রহ করে ল্যান্ডফিলে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে আলাদা করে। এসব বর্জ্য থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাব্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। এই উদ্যোগে একদিকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যেমন সহজ হবে, পাশাপাশি খুবই কম খরচে পাওয়া যাবে মূল্যবান বিদ্যুৎ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ঢাকা শহরের অন্যতম সমস্যা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। এ সমস্যার সমাধানকল্পেই বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ নিয়ে দফায় দফায় সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক সভা করা হয়। এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্যে যেসব দেশ বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, এমন বেশকটি দেশ ভ্রমণ করি। পাশাপাশি এ বিষয়ে অভিজ্ঞ দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করি।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং প্রক্রিয়াকরণ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রাইভেট সেক্টর পাওয়ার জেনারেশন পলিসি-১৯৯৬-এর আওতায় বিওও ভিত্তিতে আইপিপি হিসেবে চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিএমইসি) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বর্জ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। চুক্তির মেয়াদ ২৫ বছর। স্পন্সর কোম্পানি নিজ ঝুঁকিতে প্লান্ট স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বহন এবং উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিক্রির মাধ্যমে ব্যয় নির্বাহ করবে। সিটি করপোরেশন প্লান্ট স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান এবং নিয়মিত বর্জ্য সরবরাহ করবে। তবে বিদ্যুতের দাম ধরা হয়েছে ১৮-২০ টাকার মতো, যা বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে বিক্রি করা হবে। এই প্রক্রিয়ায় বর্জ্য প্রায় সম্পূর্ণভাবে দহন করে বর্জ্যরে আয়তন প্রায় ৯০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব এবং এর ফলে পৌর বর্জ্য ফেলার জমি কম লাগবে। বিদ্যুৎকেন্দ্র ইনসিনারেশন প্রযুক্তি প্রয়োগে বর্জ্যরে দহনের মাধ্যমে সৃষ্ট গ্যাসীয় নিঃসরণ মানমাত্রা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে, যা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা-১৯৯৭-এর মানদন্ড থেকে বেশি পরিবেশবান্ধব এবং বর্তমানে উন্নত দেশগুলোতে তা অনুসরণ করা হচ্ছে।
করোনাকালে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কীভাবে হয়েছে? মো. তাজুল ইসলাম : গত বছর ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। এরপর শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ১৯ মার্চ মাদারীপুরের শিবচরে প্রথম লকডাউন এবং ২৬ মার্চ রাজধানীসহ সারা দেশে লকডাউনের ঘোষণা দেয় সরকার। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ীসহ সবাই ঘরে থাকতে বাধ্য হন। এ সময়ে আমরা চিন্তা করি দিনমজুরসহ দরিদ্র অসহায়দের কী হবে? এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দিনমজুর, ফকির, গরিব ও অসহায়দের তালিকা করে তাদের অর্থ ও ত্রাণ সহায়তা দিই। এ ছাড়া ঢাকায় সব ধরনের নাগরিক সেবা সচল ছিল। এরই মধ্যে অন্যতম ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। লকডাউনে সবাই ছিল বাসায়, এ সময়ে ওয়াসার কর্মীরা জীবন বাজি রেখে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করেছেন।
লকডাউনে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যায়। প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পদক্ষেপ নিয়েছেন কি? মো. তাজুল ইসলাম : সারা দেশে লকডাউনের পর জিডিপি কমতে থাকে। কীভাবে গ্রামীণ অর্থনীতি ঠিক করা যায়, সেটা নিয়ে চিন্তা শুরু করি আমরা। গ্রামীণ এলাকায় সবচেয়ে কাজ করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও এলজিইডি। এই দুই সংস্থার প্রকৌশলীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করে সিদ্ধান্ত নিই এবং প্রকল্পের কাজ শুরুর জন্য নির্দেশ দিই। কারণ প্রকল্পগুলোর কাজ করবেন তো শ্রমিকরা। তারা কাজ করতে পারলে টাকা পাবেন। আর টাকা পেলে বাজারে গিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনবেন। এই লেনদেন হলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ে কিছু বয়স্ক-ভাতা (ইউনিয়নপ্রতি ৩০ হাজার টাকা) বরাদ্দ ছিল। সে টাকাটাও বিতরণ করার জন্য বলেছি, যেন সবাই লেনদেনের মধ্যে থাকে।
‘আমার গ্রাম : আমার শহর’ বাস্তবায়নে অগ্রগতি কতটুকু? মো. তাজুল ইসলাম : শহরের মানুষরা সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন আর গ্রামের মানুষ সেটা ভোগ করতে পারবেন না, এটা হতে পারে না। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী ইশতেহারে রেখেছেন ‘আমার গ্রাম : আমার শহর’। এটার অর্থ হলো শহরের সব সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সেই ইশতেহার বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমরা পালন করছি। এটা নিয়ে করোনার আগে বৈঠক করেছি। এরই মধ্যে ২৫ গ্রামকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে নেওয়া হয়েছে। এর ১৫টি রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে। ১০টি নেওয়া হয়েছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ থেকে। এগুলো বাস্তবায়নে আমরা সামনে থাকলেও সব মন্ত্রণালয় মিলে কাজ করবে। বিদ্যুৎ পৌঁছাতে বিদ্যুৎ বিভাগ, শিক্ষার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ যোগাযোগব্যবস্থা, জ্বালানিসহ সব ধরনের সুবিধা পৌঁছাতে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
রাজধানীর ডিটেইল এরিয়াপ্ল্যান (ড্যাপ) রিভিউ কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে ড্যাপ বাস্তবায়নে আপনার মত জানাবেন? মো. তাজুল ইসলাম : সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ড্যাপ রিভিউ কমিটির আহ্বায়ক করেছেন। এরই মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সসহ সিভিল সোসাইটির সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। সবার মত নিয়ে ড্যাপ চূড়ান্ত করা হবে। ড্যাপে জলাশয়, পার্ক-মাঠ, খালি জায়গা, সবুজায়নসহ সব ধরনের ব্যবস্থা থাকবে। এই ড্যাপে ভবনের উচ্চতা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তাতে আমিও একমত। কারণ একজন ২০-তলা ভবন করবেন আর সেই ভবনের চিপায় থাকবে সরু রাস্তা, ফাঁকা জায়গা থাকবে না, এটা হতে দেওয়া যায় না। এই ভবনে যারা বাস করবেন, তারা কীভাবে যাতায়াত করবেন, সেটাও ভাবতে হবে।
বর্ষা মৌসুমে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা নিরসনের কী পদক্ষেপ নিয়েছেন? মো. তাজুল ইসলাম : এবার ড্রেনেজ সিস্টেম ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। যদিও ঢাকার সাবেক দুই সিটির মেয়র হিসেবে সাঈদ খোকন ও আনিসুল হক থাকাকালে খাল ও ড্রেনেজ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগ এ দায়িত্ব সিটি করপোরেশনকে দিতে চাইলেও সেসময় দুই মেয়র তা নিতে রাজি হননি। যদিও ওই সময় ঢাকা ওয়াসা খাল, বক্স কালভার্ট ও ড্রেনেজব্যবস্থা ছেড়ে দিতে রাজি ছিল। পরে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এ দায়িত্ব নিতে রাজি হন। এরপর স্থানীয় সরকার বিভাগ এ ব্যাপারে সমঝোতা শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে ২৬ নভেম্বর খাল, ড্রেনেজ, বক্স কালভার্টসহ ঢাকা ওয়াসার ড্রেনেজ সার্কেল ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে ১৪ সদস্যের কমিটি করা হয়। কমিটির প্রতিবেদন পেয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরের পর এরই মধ্যে দুই সিটি করপোরেশন খাল, বক্স কালভার্টসহ ড্রেনেজ পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেছে। আশা করি, এবার আর ঢাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেবে না।