কুমিল্লায় গহিন পাহাড়ে শিক্ষার আলো

 

স্টাফ রিপোর্টার।।

চারদিকে গাছগাছালি ঘেরা সবুজের সমারোহ বেষ্টিত ৫০ ফুট উঁচু পাহাড়। পাখির কিচির মিচিরের শব্দে মুখরিত নিরিবিলি কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের আদিনামুড়া।

এ গহিন পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত সুফি সাধক হযরত ওয়ায়েস আল করনি . ও হযরত শাহ কামাল ইয়েমেনি রহ. এর মাজার।

জান যায়, পাহাড়ের এ জায়গাটাকে লোকজনের কাছে ব্রিটিশ আমল থেকে আদিনা মুড়া দরবার শরিফ নামে পরিচিত ।

কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার কালির বাজার ইউনিয়নের লালমাই পাহাড়ের উপর এই আদিনা মুড়া পাহাড়টি অবস্থিত।

নির্জন এ পাহাড়ের চূড়ায় এখন শিক্ষার আলোয় আলোকিত হচ্ছেন কোমলমতি সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা ।

মনোহর প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে সুউচ্চ এ পাহাড়ে শিশুদের নিয়মিত প্রতিদিন সমুধূর কন্ঠে কোরআন তেলাওয়াত করেন ।

হেফজুল কোরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীরা এখানে শুধু কোরআন তেলায়াতই যে করেন তা নয় ,তাদেরকে এখানে প্রতিদিন জাতীয় সংগীত বাংলা, ইংরেজি ও অংকসহ অন্যান্য বিষয় সমূহ শিক্ষা দেয়া হয়। এরা সবাই আদিনা মূড়া ও আশে পাশের গ্রামের নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তান

লেখাপড়া বিমূখ পরিবার গুলোকে উৎসাহ দেয়ার জন্য মাত্র ১০ টাকায় ভর্তি করানো হয়।

নিয়মিত খেলাধুলা খাওয়া দাওয়া করাসহ শিক্ষার উপকরণগুলোসহ সার্বিক মানোন্নয়নে তাদেরকে খুব যত্নসহকারে তদারকি করা হয়। শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা স্থানীয় একটি হাসপাতাল দিয়ে থাকে।

নির্জন এই পাহাড়ের চূড়ায় প্রতিদিন সমুধূর কন্ঠে কোরআন তেলাওয়াত করেন আদিনা দরবার শরীফ হেফজুল কোরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীরা। শুধু কোরান তেলোয়াতই নয়, নিয়মিত খেলাধুলা খাওয়া দাওয়া করাসহ শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নে কঠোর তদারকি করা হয়।

তারপর বইপত্র, পোষাক, খাবারসহ সবকিছুই বিনামূল্য সরবরাহ করা হয়। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার জন্য একজন অধ্যক্ষ ৪ জন শিক্ষক ২ জন হাফেজ রয়েছেন।

২০১৩ সালে খন্দকার মোঃ মনিরুল ইসলাম মাদ্রসাটি স্থাপন করেন।
হেফজুল কোরআন মাদ্রাসার সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, আদিনামূড়া ও আশে পাশের পাহাড়ী গ্রামের মানুষ অনেকটাই লেখাপড়া বিমূখ। এই পরিবারের শিশুদেরকে লেখাপড়া মূখী করার জন্য আমি উদ্যােগ নেই।

নামমাত্র ১০ টাকা মূল্য ভর্তি হয় শিশুরা। তারপর তাদের পোষাক বইপত্র খাবার সবকিছুই বিনামূল্য প্রদান করি।
মাদ্রসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন বলেন, প্রতিটি শিশুকে আমরা যত্নের সাথে কোরআন শিখাই। শিক্ষকরা খুবই আন্তরিক। শুধু কোরান শিক্ষাই নয় নিয়মিত বাংলা ইংরেজি অংক শেখানোসহ খেলাধূলা করানো হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা বাহার মিয়া বলেন,শিশুদের পদচারনায় মূখর আদিনামূড়া। শিশুরা খুব সকালে পাহাড়ের চূড়ায় কোরআন তেলোয়াত ও জাতীয় সংগীত পাঠ করে। নির্জন পাহাড়ের কোলঘেষে আমরা যখন কাজ করি তখন শিশুদের কন্ঠে এগুলো শুনলে আমাদের মন ভালো হয়ে যায়।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু বলেন,নিঃসন্দেহে এটি একটি ভাল উদ্যোগ সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করা। আমরা যার যার অবস্থান থেকে সাহায্য করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

আরো পড়ুনঃ