এটিএম কার্ড আটকে গেলে

ডেস্ক নিউজ।

ব্যাংকিং লেনদেন, এমনকি কেনাকাটার ক্ষেত্রেও বর্তমানে আমাদের নিত্যব্যবহার্য জিনিসের তালিকায় উঠে এসেছে এটিএম কার্ড। বুথ থেকে টাকা তোলার সময় মাঝেমধ্যে এটি আটকে যাওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় কার্ড আটকে গেছে, টাকাও আসেনি।

এদিকে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়ার মেসেজও চলে এসেছে ফোনে। এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টি আরও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যারা মোটামুটি পরিচিত বা অভ্যস্ত, তারা ঠান্ডা মাথায় সুরাহা করতে পারলেও নতুনদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আতঙ্কেরই। অনেকের আবার কার্ড আটকে যাওয়ার ভয়ে চেক দিয়েই টাকা তুলে থাকেন।

ব্যাংক-সংশ্লিষ্টদের মতে, এ ধরনের সমস্যায় করণীয় হলো, অস্থির না হয়ে মাথা ঠান্ডা রাখা। বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে আটকে যাওয়া কার্ড পুনরুদ্ধার কিংবা নতুন কার্ড নেওয়া যায়। এ ছাড়া টাকাও ফেরত পাওয়া যায়। তাই বুথে এটিএম কার্ড কেন আটকায় এবং আটকে গেলে কী করণীয়, সেটি ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। আটকায় যে কারণে নানা কারণে এটিএম কার্ড বুথে আটকে যেতে পারে।

এর মধ্যে অন্যতম দুটি কারণ হলো, পিন ভুল হওয়া এবং মেশিনের কারিগরি ত্রুটি। এ ছাড়া মেশিনে প্রয়োজনমতো ক্যাশ না থাকলেও কার্ড আটকে যাওয়ার ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। এ সময় টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে; কিন্তু মেশিন থেকে বের হয়নি– এমন ঘটনাও ঘটতে পারে।

এ ব্যাপারে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জুবায়ের হোসাইন বলেন, ‘পরপর বেশ কয়েকবার ভুল পিন প্রবেশ করালে কার্ড এটিএমে আটকে যেতে পারে।

আবার অনেক সময়, মেশিনে নেটওয়ার্কজনিত বা অন্যান্য কারিগরি সমস্যার কারণেও এটি হতে পারে।’ করণীয় অটোমেটেড টেলার মেশিন তথা এটিএমের কাজ যেহেতু পুরোটাই যন্ত্রনির্ভর, তাই এ ধরনের ঘটনায় অস্থির হয়ে লাভ নেই। তৎক্ষণাৎ সমাধান না মিললেও নির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি আপনার কার্ড ফিরে পেতে পারেন।

এ ক্ষেত্রে একুট ধৈর্য ধরতে হবে। কার্ড বা টাকা আটকে গেলে সঙ্গে সঙ্গেই বুথ ত্যাগ করবেন না। একটু অপেক্ষা করুন। কোনো কারণে ক্যাশ আউটের প্রক্রিয়াটি একটু ধীরে হতে পারে। তাই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে যদি কার্ড বা টাকা যেটা আটকে গেছে, সেটা বেরিয়ে আসে কিনা।

ব্যাংক কর্মকর্তা জুবায়ের বলেন, ‘কার্ড আটকে গেলে সেটি ফিরে পাওয়ার ফর্মাল উপায় হলো, যে ব্যাংকের বুথে ঘটনাটি ঘটেছে ওই বুথ ব্যাংকটির যে ব্রাঞ্চের আন্ডারে সেখানের ম্যানেজার বরাবর লিখিত আবেদন করা।’ তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে কার্ডের নম্বর, অ্যাকাউন্ট নম্বর ও ব্যবহারকারীর বিস্তারিত তথ্য সংযুক্ত করতে হবে এবং কখন কোন বুথে আটকে গেছে, সে বিষয়েও উল্লেখ করে আবেদন করতে হবে।

পরে কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। তাহলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কার্ডটি ফিরে পাবেন।’ কার্ড আটকে গেলে আরও যে বিষয়টি করতে পারেন সেটি হলো, যে ব্যাংকের কার্ড আটকানোর ঘটনা ঘটেছে, ওই ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ার নম্বরে কল দিয়ে আপনার কার্ডটি বন্ধ করে দেওয়ার অনুরোধ জানাতে পারেন।

এ ক্ষেত্রে কার্ড কোনো কারণে বেহাত হওয়ার দুশ্চিন্তা থাকবে না। তবে ওই কার্ডটি আর ফেরত পাওয়া যাবে না। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখায় গিয়ে নতুন কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে। টাকা ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রেও পদ্ধতি একই।

যে ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ওই ব্যাংকের শাখায় গিয়ে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ বা আবেদন জমা দিলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে রিফান্ড (ফেরত) হবে।

এ ব্যাপারে আইএফআইসি ব্যাংকের অফিসার সুবর্ণ মজুমদার বলেন, ‘কার্ড আটকে গেলে সেটি ফেরত নেওয়া বা নতুন করে কার্ড ইস্যু করা যায়। টাকা আটকে গেলে সেটিও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফেরত পাওয়া যায়।

আটকে যাওয়া টাকা সাধারণত ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে ফেরত পাওয়া যায়। কার্ডের ক্ষেত্রে সময় আরও কম লাগে।’ ব্যাংকের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘টাকা বা কার্ড আটকে গেলে সাধারণত দুটি উপায় অবলম্বন করা যায়।

একটি হলো, সরাসরি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখায় গিয়ে জানানো। অন্যটি হলো, ওই ব্যাংকের হেল্প লাইনের নম্বরে কল করে জানানো। অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি যাচাই করে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।’ তথ্য সূত্র সমকাল

আরো পড়ুনঃ