কুমিল্লা স্টেডিয়ামের নান্দনিকতায় মুগ্ধ দর্শকরা।
কুমিল্লা স্টেডিয়ামের নান্দনিকতায় মুগ্ধ দর্শকরা
পথিকৃত ডেস্ক।।
কুমিল্লা পূর্বে ধর্মসাগর, পশ্চিমে উজির দিঘী। উত্তরে ঈদগা আর দক্ষিণে জিলা স্কুল। এর মাঝখানে সবুজ ঘাসের মাঠ, চমৎকার গ্যালারির বেস্টনি, ভিআইপি আসন, গোছানো ড্রেসিং রুম ও মিডিয়াবক্স। নানান আয়োজনে সুসজ্জ্বিত কুমিল্লা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম।
এমন নান্দনিকভাবে স্টেডিয়াম সাজানো হয়েছে মূলত ফুটবলের জন্য। গত ২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ ফুটবল প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টুর্নামেন্টের খেলা দেখতে ভিড় করছে দর্শকরা।
প্রান্তিক পর্যায়ে ফুটবল যে এখনও বেশ জনপ্রিয় তা গ্যালারিতে দর্শকের সমাগম ও চিৎকার দেখেই আঁচ করা যায়
নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় থেকে সার্কিট হাউজ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীরা একবার চোখ বুলিয়ে নেন স্টেডিয়ামের দিকে চেয়ে।
স্টেডিয়ামে খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তাদের জন্য তৈরি ডাগআউট।
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক মানের সব আয়োজন রয়েছে। আর তাই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের অন্যতম জায়ান্ট মোহামেডান ও বসুন্ধরা কিংস কুমিল্লা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামকে হোম ভেন্যু বানিয়েছে।
গত ২১ জানুয়ারি থেকে এখানে বিপিএল ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা শুরু হয়। চারটি খেলায় আবাহনী, মোহামেডান, বসুন্ধরা ও সাইফ স্পোর্টিং মুখোমুখি হয়। সবমিলিয়ে ১৩টি খেলা অনুষ্ঠিত হবে এ মাঠে।
কুমিল্লায় বিপিএল টুর্নামেন্টের খেলা দেখতে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন গত ২৩ জানুয়ারি কুমিল্লায় স্টেডিয়াম পরিদর্শনে আসেন। তিনি দীর্ঘ সময় অবস্থান করেন স্টেডিয়ামে।
খেলা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাঠের আয়োজন সুন্দর। খেলা পরিচালনার জন্য মাঠটি উপযুক্ত। এখানে অদূর ভবিষ্যতে দু’একটি আর্ন্তজাতিক ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার ভাবনা রয়েছে বাফুফের।’
কুড়ি হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ স্টেডিয়ামে ২১ জানুয়ারি থেকে বিপিএল ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা শুরু হয়। ৩০ টাকা টিকেটের প্রতিটি খেলায় দর্শকদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে।
সোমবার বিকেলে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা কিংস বনাম মোহামেডানের খেলা দেখতে আসেন হানিফ । তার বাড়ী সদর দক্ষিণ উপজেলার।
ম্যাচ শেষে সমর্থকদের সঙ্গে খুশি বিনিময় করছেন টিপু
হানিফ বলেন, ‘স্টেডিয়ামটা খুবই সুন্দর। এখানে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার রাস্তাটা অনেক প্রশস্থ।’
একই ম্যাচ দেখা শেষে মোহামেডানের সমর্থক জুবায়ের বলেন, ‘মোহামেডান হেরেছে। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। প্রতিটি মিনিটেই আমরা গ্যালারি থেকে উৎসাহ জুগিয়েছি।’
স্টেডিয়ামের আয়োজন নিয়ে সন্তুষ প্রকাশ করে জাকির বলেন, ‘কুমিল্লা স্টেডিয়াম এখন আন্তর্জাতিক মানের।’
মাঠে দর্শকদের উপস্থিতি মন কেড়েছে বসুন্ধরা কিংসের কোচ অস্কার ব্রুজেন।
তিনি গোমতী টাইমসকে বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই তার কাছে কুমিল্লার দর্শক ভালো লেগেছে। কুমিল্লার মানুষ ফুটবল ভালোবাসে। স্টেডিয়ামের দর্শকদের উপস্থিতি তারই প্রমাণ।’
মোহামেডানের কোচ শন লেনের কাছে স্টেডিয়ামটি বেশি ভালো লেগেছে। ঢাকার বাইরে কুমিল্লা স্টেডিয়ামকেই সেরা বলছেন শন লেন।
কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা যায়, মোহামেডান ও বসুন্ধরা কিংস তাদের হোম ভেন্যু কুমিল্লা স্টেডিয়ামের সংস্কারে অর্ধকোটি টাকা ব্যয় করেছেন। ভবিষ্যতে এ মাঠে আরো বেশি বিনিয়োগের চিন্তা রয়েছে দল দুটির।
কুমিল্লা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরফানুল হক রিফাত বলেন, ‘স্টেডিয়ামটিকে আরও উন্নত সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের আশা এই স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
মাঠে ফ্লাডলাইট নেই এমন প্রশ্নের উত্তরে আরফানুল হক রিফাত বলেন, ‘১৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৩২ ফুট প্রস্থের এ স্টেডিয়ামটি ফ্লাড লাইটের ঝলকানিতে দর্শক খেলোয়াড়রা মুখর হবে আমরা সে চেষ্টাও অব্যহত রেখেছি।’
উল্লেখ্য, মোহামেডানকে ৪-১ গোলে হারিয়েছে বসুন্ধরা কিংস