তাপস চন্দ্র সরকার।
২০১০ সালে ২৯ নভেম্বর কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এক লক্ষ টাকা যৌতুকের স্ত্রী ঝর্ণা আক্তারকে জন্য মারপিট করে হত্যার অভিযোগে স্বামী আব্দুর রবকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরবেলা কুমিল্লার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি হলেন কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বামবাতাবাড়ীয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে আঃ রব।
মামলার বিবরণে জানাযায়- ২০১০ সালের ২৯ নভেম্বর দিবাগত-রাত তথা পরদিন ৩০ নভেম্বর অনুমান ০২:৩০ ঘটিকার সময় আসামির মাতা রাবেয়া বেগম মোবাইল ফোনে এজাহারকারীকে জানান যে, যৌতুকের টাকার জন্য আসামি আব্দুর তার স্ত্রী ঝর্ণা আক্তার এর সাথে ঝগড়া করে ঝর্ণাকে প্রচন্ড মারপিট করে এবং পুকুরের পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেছে। আরও জানা যায়- আব্দুর রব ও ঝর্ণার সংসারে ২ মেয়ে ও ১ ছেলে এবং দ্বিতীয় স্ত্রী সাহিদা আক্তার বানুর সংসারে এক পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর হতেই আব্দুর তাঁর ১ম স্ত্রীকে যৌতুকের দাবীতে প্রায় সময় মারধর করত। এ ঘটনায় মৃতার বাবার কুমিল্লা নাঙ্গলকোট উপজেলার কান্দাল গ্রামের মৃত মনোহর আলীর ছেলে শামসুল হক (৭০) বাদী হয়ে জামাতা আব্দুর রবসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১১ (ক) ধারার বিধানমতে পরদিন দুপুরবেলা নাঙ্গলকোট থানায় এজাহার দায়ের করিলে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে আসামি আঃ রবকে নোয়াখালীর সেনবাগ হতে ধৃত করে নাঙ্গলকোট থানাপুলিশ। এরপর আসামি আঃ রব বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। তৎপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ শাহ জাহান মামলায় উল্লেখিত ঘটনার তদন্তপূর্বক রাষ্ট্রপক্ষে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) এর ১১ (ক) ধারার বিধানমতে ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন (যাহার অভিযোগপত্র নং ১৭)। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারে আসিলে আসামির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় চার্জ গঠন শেষে রাষ্ট্রপক্ষে মানীত ১৬জন সাক্ষীর মধ্যে ১১জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানি অন্তে আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামি মোঃ আঃ রব এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিশ হাজারা টাকা অর্থ দণ্ড প্রদান করেন কুমিল্লার আদালত। রায়ে আরও উল্লেখ করেন যে, আসামীর মৃত্যু দন্ডাদেশ মাননীয় হাইকোর্ট ডিভিশন কর্তৃক অনুমোদন (confirmation) সাপেক্ষে তার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাকে গলায় ফাঁসির রজ্জু দ্বারা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হলো।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন স্পেশাল পিপি এডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত এবং আসামিপক্ষে এডভোকেট জাকির হোসেন