গোপনে কুমিল্লা শহরে এসেও শেষ রক্ষা হয়নি চৈত্রী কালাম গ্রুপের, আজিম গ্রুপের বাধার মুখে কথিত সম্মেলন পন্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার লাকসাম পৌরসভা বিএনপির ৯টি ওয়ার্ড সম্মেলন লাকসামে না করে গোপনে কুমিল্লা নগরীতে করতে এসেও শেষ রক্ষা হলো না চৈতী কালাম সমর্থিত পৌরসভা বিএনপির। সাবেক এমপি কর্নেল(অব:) আনোয়ারুল আজিমের সমর্থকদের বাঁধার মুখে সম্মেলন পন্ড হয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
লাকসাম উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির একাধিক নেতৃবৃন্দ জানায়, গত এক বছর আগে লাকসাম পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক কমিটি তিন মাসের জন্য গঠিত হলেও কর্নেল আজিম গ্রুপের বাধার মুখে পড়তে পারে এই ভয়ে তারা এতদিন সম্মেলন করেননি। লাকসামে সম্মেলন করলে হয় কর্নেল আজিম গ্রুপের নেতাকর্মীদের কমিটিতে স্থান দিতে হবে, নতুবা তারা সম্মেলন করতে দিবে না। এই ভয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম সমর্থিত (চৈতী কালাম) নেতাকর্মীরা লাকসাম পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের কমিটি গোপনে করার সিদ্ধান্ত নেয় কুমিল্লা নগরীতে।
পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্তক্রমে গতকাল শনিবার (২ জুলাই) সকালে কুমিল্লা নগরীর নজরুল এভিনিউস্থ নাসির সেন্টার নামক বিল্ডিং এর ৪র্থ তলায় কাশ্মীরি রেষ্টুরেন্টে আয়োজন করে লাকসাম পৌরসভা বিএনপির ৯ ওয়ার্ডের ব্যানার সর্বস্ব সম্মেলন।
লাকসাম পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক আবুল হাসেম মানু, যুগ্ম আহবায়ক মনির আহমেদ ও সদস্য সচিব আবুল হোসেন মিলনের নেতৃত্বে কালাম সমর্থিত ২৫/৩০ জন নেতৃবৃন্দ ৯ ওয়ার্ডের ৯টি ব্যানার নিয়ে কুমিল্লা নগরীর কাশ্মীরি রেষ্টুরেন্টে উপস্থিত হয়ে ব্যানার টানানোর প্রস্তুতি নেয়।
দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের না জানিয়ে লাকসাম থেকে পৌরসভা বিএনপির ওয়ার্ড সম্মেলন গোপনে কুমিল্লা নগরীর কাশ্মীরি রেষ্টুরেন্টে হচ্ছে এই খবর শুনে সাবেক এমপি কর্নেল আজিম সমর্থিত নেতাকর্মীরা সকাল সাড়ে ৯টায় হোটেলে উপস্থিত হয়ে আহবায়ক ও সদস্য সচিবের কাছে জানতে চান , কুমিল্লা শহরের হোটেলে কেন লাকসাম পৌরসভা বিএনপির ওয়ার্ড সম্মেলন হচ্ছে। বিএনপি কি কোন নিষিদ্ধ সংগঠন? কেন কর্নেল আজিম সাহেবের নেতাকর্মীদের সম্মেলনের কথা জানানো হয়নি। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনার এক পর্যায়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠান বন্ধ করে নিজেরাই ব্যানার খুলে ফেলে এবং উভয় পক্ষদেরকে হোটেল ছেড়ে চলে যেতে বলে।
ফলে পন্ড হয়ে যায় কালাম সমর্থিত পৌরসভা বিএনপির ব্যানার সর্বস্ব ওয়ার্ড সম্মেলন। এক পর্যায়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উভয় পক্ষকে হোটেল ত্যাগ করতে বলে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে লাকসাম উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব, বর্তমান আহবায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও আজিম সমর্থিত গ্রুপের নেতা তাজুল ইসলাম খোকন বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গনতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে আজ মৃত্যুযাত্রী। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আগামীর রাষ্ট্রনায়ক জননেতা তারেক রহমান নির্বাসিত জীবনে থেকেও জনগণের ভোটাধিকার ও গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করছেন। কিন্তু প্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়া ও প্রিয় নেতা তারেক রহমানের আদর্শ ও উদ্দেশ্য জলাঞ্জলি দিয়ে লাকসামের কমিটি লাকসামে না করে সম্পূর্ন অগণতান্ত্রিকভাবে গোপনে কুমিল্লা শহরে এসে ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে চৈতী কালাম তার পকেটের লোকদের দিয়ে কমিটি করতে চাচ্ছিল। এ খবর আমাদের লোকেরা শুনে তাদের বাধা দিয়ে সম্মেলন বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা বলছি, কোন ভয় নেই, আমরা সহযোগিতা করবো। লাকসামের কমিটি লাকসাম এসে করেন, কুমিল্লায় নয়।
লাকসামের সম্মেলন কেন কুমিল্লা শহরে করতে আসছেন জানতে চাইলে কালাম সমর্থিত গ্রুপের নেতা ও লাকসাম পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক আবুল হাসেম মানু বলেন, লাকসামে সম্মেলন করার মত রাজনৈতিক পরিবেশ নেই। তাই বাধ্য হয়ে কুমিল্লায় সম্মেলন করতে এসেছি। যখন পরিবেশ হবে তখন লাকসামে করবো। আজিম সাহেবের লোকেরা আওয়ামীলীগের ক্যাডার, পুলিশ , ডিবি ও ডিএসবির লোক এনে আজ আমাদের সম্মেলন পন্ড করে দিয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।