নিজস্ব প্রতিবেদক।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিকআপ, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লুন্ঠিত মালামাল ও বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার মনপুরা গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. আব্দুল হান্নান (৩৫), লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরমোহনা (বাহাদুর বাড়ি) গ্রামের মৃত সিরাজ মোল্লার ছেলে মো. শরীফ হোসেন (৪৫), কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নুরপুর (দোলাই নবাবপুর) গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে মো. আলাউদ্দিন (৩৫) এবং একই উপজেলার জোরপুকুরিয়া (জামিরাপাড়া ভূঁইয়া বাড়ি) গ্রামের মৃত হাজী রমিজ উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম (৬০)।
বুধবার (১২ মার্চ) জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান।
পুলিশ সুপার মি. নাজির সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে পরপর দুটি প্রবাসীর গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। উভয় ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পরে, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, তিনটি ঘটনায় একই পিকআপ ব্যবহার করা হয়েছে এবং একই দল এসব ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কুমিল্লার চান্দিনা ও পার্শ্ববর্তী চাঁদপুরের কচুয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিকআপ, দেশীয় অস্ত্র ও লুন্ঠিত মালামালসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি পিকআপ, দুটি স্টিলের কিরিচ, দুটি রামদা, একটি চাইনিজ কুড়াল, একটি দেশীয় কুড়াল, একটি লোহার শাবল, দুটি লোহার রড, একটি মোটা রশি, ১৬ কুয়েতি দিনার, ৮০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ৩,৫০০ টাকা বাংলাদেশি মুদ্রা, একটি বিদেশি কম্বল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা পরপর দুটি প্রবাসীবাহী গাড়ি থামিয়ে ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। তাদের কাছ থেকে জানা যায়, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের ২০-২৫ জনের একটি ডাকাত চক্র তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মহাসড়কে ডাকাতি করে। তারা বিমানবন্দর থেকে সোর্সের মাধ্যমে প্রবাসীদের গাড়ির তথ্য সংগ্রহ করে এবং মেঘনা টোল প্লাজা থেকে পিছু নেয়। নির্জন স্থানে পিকআপ দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে ছয়-সাত জনের দল দেশীয় ধারালো অস্ত্রের মুখে প্রবাসীদের জিম্মি করে সর্বস্ব লুটে নেয়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া এবং তাদের সহযোগীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, আমরা হাইওয়েতে আমাদের ১০টি পেট্রোলিং টিম রেখেছে। প্রবাসীদের গাড়িগুলো একত্রিত করে আমরা তাদেরকে গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আরাফাতুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. রাশেদ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ মো. আবদুল্লাহসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
,