ব্রাহ্মণপাড়ার বড়ধুশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ 

 

ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি।

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা ইউনিয়নের বড়ধুশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে জানা যায়, বড়ধুশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা গত ১৩ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

এ ব্যপারে বড়ধুশিয়া গ্রামের মৃত আবু তাহের ভূইয়া’র ছেলে ছফিউল্লাহ ভূইয়া নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারী বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করে বলেন, আমি উক্ত পরিক্ষায় লিখিত ও মৌখিকভাবে অংশ গ্রহণ করি। এ ছাড়া আমি বড়ধুশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী পদে খন্ডকালিন নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘ প্রায় ২ বছর দক্ষতার সাথে চাকরি করে আসছিলাম।

বড়ধুশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও অন্যান্যরা আমাকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চাকরি এমপিও করবে বলে আশ্বস্থ্য করেছিলেন। গত ১৩ ডিসেম্বর নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বে আমার নিকট নিয়োগ বোর্ডের কিছু সদস্য টাকা চেয়েছিল। আমি টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করি।

উক্ত পরীক্ষায় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফারুক আহাম্মদ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মোঃ হুমায়ন কবির ও মানিজিং কমিটির সদস্য মোঃ হোসেন ভূঁইয়া মিলে নিয়োগ বোর্ড গঠন করেন। উক্ত নিয়োগ বোর্ডে অফিস সহায়ক, আয়া ও নৈশপ্রহরী যাদেরকে নিয়োগ দিয়েছেন তাদের নিকট হতে হোসেনের মাধ্যমে ৮,০০,০০০/- (আট লক্ষ) টাকা ঘুষের বিনিময়ে নিয়োগ প্রদান করেছেন।

যাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, আমরা সবাই এক সাথে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেছিলাম। লিখিত পরীক্ষায় এমন ব্যক্তিকে পাশ দেখানো হয়েছে যে ব্যক্তি নিজের নাম ছাড়া অন্য কিছু লিখতে পারে না।

এ নিয়ে এলাকার লোকজন বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের জমির জায়গা ও প্রতিষ্ঠাকালীন প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তার বাবা মৃত আবু তাহের। তারা আরও বলেন, ছফিউল্লাহ ভূইয়া উক্ত বিদ্যালয়ে দীর্ঘ দুই বছর নিয়োগ পাওয়ার আশায় নৈশপ্রহরী হিসেবে চাকুরি করেছেন।

চাকরি তার পাপ্য ছিল। কিন্তু ঘুষ নিয়ে অন্যকে চাকরি টা দেওয়া মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমরা মনে করি। এ ছাড়া উক্ত বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আবদুল হান্নান ভূইয়া বলেন, নৈশপ্রহরী হিসেবে ছফিউল্লাহ ভূইয়া নিয়োগ না পাওয়াটা অমানবিক।

এ ছাড়া বড়ধুশিয়া গ্রামের আওয়াল ভূইয়া, কামরুল হাসান, তৌহিদ ভূইয়া, নাজমুল হাসান, নাছির উদ্দীন ভূইয়া, মাহমুদুল হাসান, ইসমাইল, রমজান সহ আরো অনেকে বলেন, ছফিউল্লাহ ভূইয়া দুই বছর স্বল্প বেতনে চাকরিটা করেছিল।

বর্তমানে চাকরি টা তার পাপ্য ছিল, এবং ছফিউল্লাহ ভূইয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা বিদ্যালয়ের জায়গাটি দান করেছিল। তার বাবা ছিল উক্ত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার আওয়ামী লীগের নেতা বলেছেন যে দুই বছর ছফিউল্লাহ ভূইয়াকে স্কুলে আশা দিয়ে চাকুরী করিয়েছে তাই তাকে মানবিক কারনে চাকুরী তাকে দেয়া উচিত ছিল। তার সাথে এমন প্রতারণা করা ঠিক হয়নি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

এ ব্যপারে বড়ধুশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মোঃ হুমায়ুন কবির মোবাইল ফোনে বলেন, আমি অসুস্থ। ঢাকা হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি রয়েছি। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এ ব্যপারে অভিযুক্ত ম্যনিজিং কমিটির সদস্য হোসেন ভূইয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি এবং তার মোবাইল নাম্বারটিও বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ দৌলত জামান ভূইয়া বলেন, আমরাই ছফিউল্লাহ ভূইয়াকে দুই বছর পূর্বে নিয়োগ দিয়েছিলাম, বর্তমানে নিয়োগ পরীক্ষা সঠিক, টাকার বিষয়টি আমি অবগত নই।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফারুক আহমেদ বলেন, আমি কমিটির সদস্যদের নিকট তাকে নিয়োগের ব্যাপারে আলোচনা করেছিলাম, কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষা স্বচ্ছ হওয়ায় তাকে নিয়োগ দেওয়া যায়নি।

আরো পড়ুনঃ