আব্দুল্লাহ, কুবি প্রতিনিধি।
রাত পোহালেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হবে। সভাকে ঘিরে ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উৎসব মুখর পরিবেশ। কর্মীসভা সফল করতে পদ-প্রত্যাশী নেতাকর্মীসহ সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী সভা সফল করতে এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্নও বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আগামীকাল সোমবার (০৯ অক্টোবর ) বিকেল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে এই কর্মীসভা। কর্মীসভা উপলক্ষে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে।
শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী ছাত্রনেতারা হলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রথম কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-ইলাহী, বিগত কমিটির সহ সভাপতি এইচ. এম. মেহেদী হাসান, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বজন বরণ বিশ্বাস, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মু. রকিবুল হাসান রকি, মো. ইকবাল হোসেন খান, ইমান হোসেন মাসুম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাৎ মোঃ সায়েম, কাজী নজরুল ইসলাম হলের সাবেক সভাপতি ইমরান হোসাইন, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, কাজী নজরুল ইসলাম হলের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুল হাসান পলাশ, নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের সভাপতি ইসরাত জাহান জেরিন, ছাত্রলীগ নেতা তাহারাতবির হোসেন পাপন মিয়াজী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের যুগ্ম সম্পাদক মুমিন শুভ, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুর বিশ্বাস সহ আরো অনেকে।
তবে কে কোন পদের প্রত্যাশা করছেন সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজেদের শক্ত অবস্থান দেখাতে মরিয়া। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের আগমনকে অভ্যর্থনা জানাতে বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে লেখা ব্যানার-পোস্টারে ইতোমধ্যে আবৃত হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেইট অভিমুখে দেয়া হয়েছে নেতাদের প্রচারণামূলক ব্যানার।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রথম কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-ইলাহী বলেন, ‘কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর দীর্ঘ সাত মাস শেষে আমাদের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্তরের নেতাকর্মীরা আনন্দিত,উচ্ছাসিত। ইতিমধ্যেই আমাদের সকলের ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে, আশাকরি আগামীকাল কর্মীসভা সুন্দরভাবে সফল হবে’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সহ-সভাপতি এইচ. এম. মেহেদী হাসান বলেন, ‘দীর্ঘ সময়ের পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীসভা হচ্ছে এটা আমাদের কাছে একটা উৎসবের মতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নেতাকর্মীর যারা আছে তারা সবাই সবার মতো করে কাজ করছে কমিটিতে আসার জন্য। আশাকরি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সৎ, যোগ্য এবং যারা মাদকের বিরুদ্ধে আছে তাদেরকেই নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ দিবে’।
ছাত্রলীগ নেতা মো. ইকবাল হোসাইন খান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বেশিরভাগ কর্মী আমার নেতৃত্বে সংঘঠিত এবং একজন কর্মী বান্ধব সংগঠক হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগে আমার ব্যপক সুনাম রয়েছে। আসন্ন কমিটিতে আমি যদি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসতে পারি তাহলে আমার ইউনিটে বাঙ্গালী জাতির পিতার আদর্শ কে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবো। এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার পুরো ইউনিট নিয়ে সরকার বিরোধী রাজাকার চক্রকে প্রতিহত করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবো।’
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাৎ মোঃ সায়েম বলেন, ‘আমি খুব আনন্দিত যে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আগামীকালে কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হবে, কর্মীসভা উপলক্ষে ইতিমধ্যে আমাদের সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে, আশাকরি আগামীকাল সুন্দর একটি কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হবে। সকল ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি থেকে আমরা বিরত থাকব।’
নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশরাত জাহান জেরীন বলেন, ‘ আগামীকাল দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীসভা আয়োজিত হতে যাচ্ছে। নতুন নেতৃত্ব দেখতে পাওয়ার আশায় পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে নেতৃত্ব উঠে আসবে। পদপ্রত্যাশী সবার জন্য শুভকামনা রইলো। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট ছাত্রলীগের প্রতিনিধিত্ব করবে বলে আমি আশাবাদী। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’।
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, ‘কর্মীসভাকে ঘিরে আমাদের সকল নেতাকর্মী, পদপ্রার্থী সবার মধ্যে উচ্ছাস উদ্দীপনা বিরাজ করছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ একটা সুসংগঠিত, স্মার্ট, এবং অনুকরণীয় একটা ইউনিট হিসেবে কালকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে আমরা ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা করবো।’
কর্মীসভাকে ঘিরে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বিষয়ে প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলেছি তারা যেন ছাত্রলীগের যে ঐতিহ্য সেটা বজায় রেখে ক্যাম্পাসকে সুশৃঙ্খল অবস্থায় রাখে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকেও তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং আমাদের সাথেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কথা হয়েছে। তাদেরকে এটাই বলা হয়েছে ক্যাম্পাসে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা করতে না পারে। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা প্রক্টরিয়াল বডি সার্বক্ষনিক ক্যাম্পাসে অবস্থান করবো। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ক্যাম্পাসের মেইন গেইটের সামনে থাকবেন। সব মিলিয়ে আমরা আশা করছি ক্যাম্পাসে একটা সুন্দর ও সুশৃঙ্খল প্রোগ্রাম হবে’।