স্বাধীনতার বার্তাবাহককে, হুইপপুত্রের হুমকি‘মুক্তিযোদ্ধা পিটাইয়া হাত পাকাইছি, থাপড়াইয়া দাঁত ফেলে দিবো’হায়দার আলী।।
স্বাধীনতার বার্তাবাহককে, হুইপপুত্রের হুমকি‘মুক্তিযোদ্ধা পিটাইয়া হাত পাকাইছি, থাপড়াইয়া দাঁত ফেলে দিবো’হায়দার আলী।
ডেস্ক নিউজ।।
‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে লেংটা করে ছেড়ে দিবো, রাস্তায় যেদিন কাপড় খুলে রেখে দিবো, সেদিন বুঝবেন। মুক্তিযোদ্ধা পিটাইয়া হাত পাকাইছি, বাড়াবাড়ি করলে থাপড়াইয়া দাঁত ফেলে দিবো।’ এভাবেই হুমকি দিয়েছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর পুত্র নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন। আর যাঁকে হুমকি দেন তিনি চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার বার্তাবাহক মো. দিদারুল আলম, যিনি চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং মহানগর আওয়ামী লীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক।
গত সোমবার কালের কণ্ঠকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দিদারুল আলম বলেন, ‘সেই দিন ছেলের বয়সী শারুনের কথায় বুক ভেঙে যায়। লজ্জায় বিষয়টি গোপন রাখতে চেয়েছিলাম। পরে পাঁচলাইশ থানায় জিডি করি ও আজম নাছিরকে জানাই। বিষয়টি ভাবলে এখনো ভীষণ খারাপ লাগে।’ শাস্তি না হওয়াতেই শারুন দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, ‘সেই বেয়াদব ছেলেটিই এখন আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্য। চট্টগ্রাম তথা সারা দেশের মানুষের কাছে যিনি শ্রদ্ধার পাত্র, সেই প্রধানমন্ত্রীকেও অপমান করতে ছাড়েনি হুইপপুত্র শারুন।’
বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ এই প্রবীণ নেতা মুক্তিযুদ্ধে অসম সাহসী ভূমিকা পালন করেন। চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার যে ঘোষণাপত্রটি পাঠ করা হয়েছিল, সেটিরও গর্বিত বাহক ছিলেন দিদারুল। ঘোষণাপত্রটি বঙ্গবন্ধু ঢাকা থেকে ওয়্যারলেসে পাঠান, সেখান থেকে চট্টগ্রাম ওয়্যারলেসে পাঠিয়ে অপারেটর তাঁকে ফোন করেন। ভোরে সেটি গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নানের কাছেসহ বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেন। তারপর সেটি পাঠ করেন এম এ হান্নান।
দিদারুল ১ নম্বর সেক্টরে মেজর রফিকুল ইসলামের অধীনে যুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধে চর হিসেবে কাজ করতে গিয়ে তিনবার ধরা পড়লেও কাকতালীয়ভাবে বেঁচে যান। যুদ্ধের শেষ দিকে ফটিকছড়ি, রাউজানে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন। সেই বেঁচে যাওয়াকে দ্বিতীয় জীবন মনে করে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন জীবনে কখনো দুর্নীতির সঙ্গে আপস করবেন না।