মুরাদনগর প্রতিনিধি।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন চাপিতলা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কার্যালয় নামে সাইনবোর্ড টানিয়ে চাপিতলা নিমাইজুড়ি নদী দখল করে পাকা দোকান ঘর উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে ইউয়িন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা অবশ্য জানিয়েছেন, ওই কার্যালয় সম্পর্কে তাঁরা কিছুই জানেন না।
জানা যায়, উপজেলার পূর্ব ঘোড়াশাল থেকে প্রবাহিত হওয়া নদীটি চাপিতলা গ্রাম হয়ে রামচন্দ্রপুর তিতাস নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে। এটি বুড়িনদীর একটি শাখা। যার নাম নিমাইজুড়ি নদী। এক সময় এ নদী দিয়ে যাত্রী ও মালবাহী শত শত নৌকা এবং ট্রলার চলাচল করতো। কিন্তু নদীটির দুই পাড় দিয়ে দখল হয়ে যাওয়ায় আজ বিলীনের পথে এই নদী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাপিতলা-বৃষ্ণপুর সড়ক ও কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের পাশদিয়ে গিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর দুই পাড়দিয়ে অবৈধ দখল করে নির্মাণ হয়েছে দোকান ঘর। অপর দিকে চাপিতলা-বৃষ্ণপুর সড়কের দক্ষিন দিকে নদীর পারে অনেক অংশ নিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা দোকান ঘর। এরই পাশে টানানো হয়েছে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের একটি সাইনবোর্ড। তাতে লিখা রয়েছে, “ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন” ৮নং চাপিতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এর অফিস”।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের দল এখন ক্ষমতায়। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার শক্তি কারোর নেই। দলীয় কার্যালয়ের নামে ইউয়িন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম এই নদীর উপর পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করছেন। প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এই অবৈধ দখল বন্ধ করা সম্ভব না।
এ বিষয়ে অভিযোক্ত চাপিতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম পাকা ঘর নির্মাণের কথা স্বীকার করে বলেন, এটি দোকান ঘর নয়, চাপিতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস করা হচ্ছে । নিমাইজুড়ী নদীর বিভিন্ন স্থানে দখল করে অনেকেই দোকান ঘর করে ব্যবসা করছে কিন্তু আমাদের আওয়ামীলীর অফিস নির্মাণ করছি বলে অনেকেই এই নিয়ে বিভিন্ন কথা বলছে।
অনেকে দোকান ঘর করে টাকা খাইতেছে, সেটা কোন অপরাধ না? আজ আমরা আওয়ামীলীগের অফিস করতেছি তাতে অনেকের সমস্যা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার পরও আমরা অফিস করতে পারব না?
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও বাঙ্গরা বাজার থানা কৃষক লীগের সভাপতি আবু মুছা আল কবির বলেন, আমি জানি এখানে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের অফিস নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়টি আমার জানা নেই। ত্রই বিষয়টি নিয়ে আমি খোজঁখবর নিচ্ছি।
মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক গোলাম সারোয়ার হাসান চিনু বলেন, নিমাইজুড়ী নদীর উপর আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মান করার বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগ কিছুই যানে না। আমরা বিষয়টির সম্পর্কে খবর নিচ্ছি।
মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো: নাজমুল হুদা বলেন, সরকারী স্থানে কেহই স্থাপনা নির্মাণ করতে পারেনা। বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনারস্থলে লোক পাঠিয়ে খবর নিচ্ছি। বিষয়টি সত্য হলে ওই স্থাপনাটি উচ্ছেদ করা হবে।