বাবাকে উঠানে ফেলে রাখে ছেলেরা! মুচলেকা দিয়ে নিল ঘরে
ডেস্ক নিউজ।।
লক্ষ্মীপুরে শয্যাশায়ী শফিকুল ইসলামকে (৯৫) বাড়ি থেকে বের করে উঠানে ফেলে রাখা সেই ছেলেরা স্থানীয় প্রশাসনকে মুচলেকা দিয়েছে। শুক্রবার বিকেলে সাড়ে ৪টা থেকে দুই ঘণ্টা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মামুনুর রশিদ ছেলে ও প্রতিবেশীদের নিয়ে বৈঠক করেন।
পরে বাড়িতে থাকা দুই ছেলে লিখিতভাবে মুচলেকা দিয়ে বাবাকে সঙ্গে রেখে সেবা-যত্ন করার অঙ্গীকার করেন। বিষয়টি তদারকিতে রাখার জন্য পৌরসভার কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা পাটওয়ারীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এর আগে সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ড মেঘনা রোডে ছেলের বাসার সামনে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকতে দেখা যায় বৃদ্ধ শফিকুলকে।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল ইকবাল ও রাজীব হোসেনকে শফিকুলকে উদ্ধার করে। এ সময় তারা ছেলে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। পরে কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায় এবং তাদের ব্যবস্থাপনায় শফিকুলের বড় মেয়ে সুরাইয়া বেগমের পৌরসভার মজুপুর এলাকার শ্বশুরবাড়িতে তাকে পৌঁছে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে শফিকুল বার্ধক্যজনিত রোগে বাসায় শয্যাশায়ী। তিনি ছাপাখানায় কাজ করতেন। দুই বছর আগে তিনি চার ছেলে ও তিন মেয়েকে তার সম্পত্তি ভাগ করে দেন। ছেলেদের মধ্যে শাহ আলম অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য, জাহাঙ্গীর আলম বিজিবি সদস্য, আলমগীর হোসেন প্রবাসী। অন্য ছেলে সোহাগ কয়েক বছর আগে মারা যান।
পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডে সবার পাশাপাশি বিলাসবহুল বহুতল বাড়ি রয়েছে। শফিকুল ছেলে জাহাঙ্গীরের বাসায় ছিলেন। কিন্তু বাবার পরিচর্যা করতে অনীহা দেখিয়ে শুক্রবার সকালে বাসা থেকে বের করে ছেলে শাহ আলমের বাসার সামনে উঠানে মাটিতে শীতলপাটির মধ্যে ফেলে রাখেন।
এরপর কোন ছেলেই বাবাকে ঘরে তোলেনি। উঠানে শফিকুলকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় এক ব্যক্তি ঘটনাটি স্থানীয় প্রশাসনকে জানায়।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা পাটওয়ারী বলেন, এসিল্যান্ডের সঙ্গে আমিও ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ছেলে ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে আমরা দুই ঘন্টা কথা বলেছি। বাড়িতে থাকা দুইছেলে মুচলেকা দিয়েছে।
তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি করলে মামলা করা হবে। কয়েকদিন পরে মেয়ের বাড়ি থেকে শফিকুলকে এনে জাহাঙ্গীরের ঘরে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছে।সূএঃ কালের কন্ঠ