আওয়ামীলীগ প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ; অংশ নিচ্ছে না ২০ দলীয় জোট; জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী,একমাত্র নারী প্রার্থী নাজনীন

আওয়ামীলীগ প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ; অংশ নিচ্ছে না ২০ দলীয় জোট; জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী,একমাত্র নারী প্রার্থী নাজনীন

বিশেষ  প্রতিনিধি।।

কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। মাঠে সক্রিয় রয়েছেন ৭ জন প্রার্থী। চান্দিনা আসনে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা শেষ পর্যন্ত ডজনখানেক হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। দলীয় মনোনয়ন কে পাবেন,তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

এ আসনের আসন্ন উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় আলোচনায় রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত, প্রয়াত অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ এমপি’র পুত্র চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদ উল্লাহ, চান্দিনা উপজেলা যুবলীগের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ব্যবসায়ী জাকির হোসেন (আজাদ), চান্দিনা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নাজমুল আহসান মজুমদার (রিপন), একমাত্র নারী প্রার্থী, নারী নেত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং কুমিল্লা উত্তর জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহবায়ক  নাজনীন আক্তার, চান্দিনা উপজেলা কৃষকলীগ আইন বিষয়ক সম্পাদক শাহজালাল মিঞা শিপন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের সবাই দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষেই নির্বাচনে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

তবে এ উপ-নির্বাচন নিয়ে বিরোধী জোটের মধ্যে ২০ দলীয় জোটের কোন প্রার্থী অংশ নিচ্ছে না। নেই কোনো আলোচনা বা তৎপরতা।

এদিকে জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করবেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক মো. লুৎফুর রেজা খোকন।

এর আগে চলতি বছরের জুনে কুমিল্লা-৫ আসনের উপনির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা তালিকায় ছিল দেড় ডজনেরও বেশি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ওই আসনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নৌকার প্রার্থী জয়ী হন। চান্দিনা আসনে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা শেষ পর্যন্ত ডজনখানেক হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

বিভিন্ন কারণে কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসন আলোচিত। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাÐের মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত আসামি কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশিদের বাড়ি এখানে। এ আসন থেকে তিনি ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী হিসেবে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারি বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করে এমপি হয়েছিলেন। আবার এ আসন থেকেই প্রয়াত এমপি অধ্যাপক আলী আশরাফ পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ফ্রিডম পার্টির সাথে লড়াই করে আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী করেছেন তিনি।

অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, দলের নেত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইব। দল যোগ্য মনে করলে মনোনয়ন দেবে। দলীয় মনোনয়ন পেলে নৌকাকে বিজয়ী করে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করতে আগ্রহী।

প্রয়াত অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ এমপিপুত্র ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু বলেন, আমার বাবা নেই। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এখন আমার অভিভাবক। বাবা এ আসনে পাঁচবার এমপি হয়ে দীর্ঘ ৫৮ বছর এলাকার মানুষের জন্য কাজ করেছেন। চান্দিনা উপজেলা আওয়ামীলীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। আমি নেত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইব। আমরা চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগ তার সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে নৌকার জন্য কাজ করব ইনশাআল্লাহ।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক মো. লুৎফুর রেজা খোকন বলেন- উপ-নির্বাচনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করবো। সুযোগ পেলে জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করতে চাই।

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং কুমিল্লা উত্তর জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহŸায়ক একমাত্র নারী প্রার্থী নাজনীন আক্তার বলেন- চান্দিনার মানুষের দোয়া ও ভালোবাসা আমার এগিয়ে যাওয়ার সাহস যোগায়। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে আন্তরিক। তাই সব কিছু বিবেচনা করে আমার হাতে নৌকা তুলে দিবেন বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

চান্দিনা উপজেলা কৃষকলীগ আইন বিষয়ক সম্পাদক শাহজালাল মিঞা শিপন বলেন- ২০০১ ও ২০০৬ সালে আমার ভাই প্রয়াত বীরমুক্তিযোদ্ধা শাহাজাদা মিঞা খোকা এবং আমি দুর্দিনে নেত্রীর নির্দেশে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দায়ের করা মামলায় প্রায় ৩০ হাজার আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীকে বিনা পয়সায় মামলা সহায়তা দিয়েছি। এজন্য আমি বিশ্বাস করি নেত্রী খোকা পরিবারকে মূল্যায়ণ করবেন।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এ আসনে মনোনয়ন দাখিল ১৩ সেপ্টেম্বর, মনোনয়ন বাছাই পরদিন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ২০ সেপ্টেম্বর এবং ভোটগ্রহণ ৭ অক্টোবর। আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক আলী আশরাফ গত ৩০ জুলাই মারা গেলে এ আসন শূন্য হয়। ১৩ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ আসনে ভোটার সংখ্যা পৌনে তিন লাখ। এখানে ইভিএমে ভোট নেওয়া হবে।

আরো পড়ুনঃ