কুমিল্লায় ১৫ দিন ধরে নিখোঁজ ৭ শিক্ষার্থী

ডেস্ক নিউজ।।

কুমিল্লার ছয় কলেজ শিক্ষার্থী গত ২৩ আগস্ট কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। যাওয়ার সময় তেমন টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোন কিংবা পোশাকও নেয়নি তারা। এর পর থেকে তাদের কোনো সন্ধান পাচ্ছে না পরিবারের সদস্যরা। একই সঙ্গে তাদের সঙ্গে এক ছাত্রের আত্মীয়ও নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এরই মধ্যে এ ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

গত ২৪ আগস্ট থেকে বিভিন্ন সময়ে ছয়টি সাধারণ ডায়েরি করেছেন অভিভাবকরা। অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিখোঁজ হওয়া প্রত্যেকেই পরস্পরের পরিচিত। তাদের সবার বয়সই ১৭ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে ছয়জন কুমিল্লার বিভিন্ন কলেজে অধ্যয়নরত। পড়াশোনার বাইরে অন্য কোনো বিষয়ের প্রতি কখনো তারা সন্তানদের আগ্রহ দেখেননি। কলেজ, কোচিংয়ের বাইরে যে সময়টি পেত ওই সময় বাসায় বসে বইপুস্তক কিংবা মোবাইল ফোনে সময় কাটাত তারা।

ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিজ নিজ সন্তানদের কোনো শত্রুও নেই বলে অভিভাবকরা জানান। নিখোঁজ হওয়া শিক্ষার্থীরা হলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী ইমরান বিন রহমান (১৭), একই কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সামি (১৮), কুমিল্লা সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী হাসিবুল ইসলাম (১৮), একই কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিহাল (১৭), ভিক্টোরিয়া কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ইমতিয়াজ আহমেদ রিফাত (১৯), একই কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের আমিনুল ইসলাম আলামিন (২৩) ও ঢাকা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্সসহ কম্পিউটার সায়েন্স সম্পন্ন করা নিলয় (২৫)।

তাদের মধ্যে নিহাল ও নিলয় সম্পর্কে খালাতো ভাই। কুমিল্লা নগরীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মুজিবুর রহমানের ছেলে ইমরান বিন রহমান। সে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মজিবুর রহমান বলেন, “তার ছেলে পড়াশোনা, কলেজ, কোচিং সেন্টার আর মসজিদ ছাড়া কোথাও যায় না। ২৩ আগস্ট দুপুরে আমাকে বলে, ‘আব্বু, আমি আজ কোচিং থেকে রেলস্টেশন মসজিদে তাবলিগের বয়ান শুনতে যাব।

ফিরতে দেরি হবে, আম্মুকে বোলো না। ’ ওই দিন রাতে বাসায় না ফেরার কারণে সারা রাত খোঁজাখুঁজি করেছি ছেলের। পরদিন কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি করি। পরে র‌্যাব কুমিল্লাকে অবহিত করি। ” কুমিল্লা সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিহালের বাবা সাইফুল ইসলামসহ নিখোঁজ হওয়া অন্য অভিভাবকরাও প্রায় একই ধরনের কথা বলেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমরা কয়েকজন শিক্ষার্থী মিসিংয়ের জিডি হাতে পেয়েছি।

৫ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। তারা দলবদ্ধভাবে কোথাও গিয়েছে, নাকি অন্য কোনো বিষয় আছে তা তদন্তের পর বলতে পারব। আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের দ্রুত উদ্ধার করতে।

’ র‌্যাব-১১ সিপিসি ২, কুমিল্লার কম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাচ্ছি না। আশা করি দ্রুতই আপনাদের অগ্রগতি জানাতে পারব। ’সূএঃ নিউজ বাংলা

আরো পড়ুনঃ