নেকবর হোসেন।
৮ বছরের প্রেমের সম্পর্ক থেকে অনেকটা পরিবারের অমতেই বিয়ে করেন এমরান ও উষা দম্পতি। কিন্তু এক বছর না পেরতে তাদের দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে অশান্তি। স্ত্রী উষা ঢাকায় পড়াশুনার সুবাদে জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায় ,নানাভাবে চেষ্টা করেও স্ত্রীকে পরকীয়া সম্পর্ক থেকে ফিরাতে না পেরে অবশেষে রাগ ক্ষোভ- অভিমানে আত্মহত্যা করে এমরান হোসেন মুন্না (২৯) নামের কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের এক নেতা ।
গত বুধবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা নগরীর বারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষার (২৮) বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের পিতা মো.মতিউর রহমান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শহরতলীর বারপাড়া এলাকার মো.মতিউর রহমানের পুত্র এমরান হোসেন মুন্না। লাকসামের রাজাপুর এলাকার খিলা বাজার গ্রামের সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের কন্যা সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষা। একসময় কুমিল্লা কর্মাশিয়াল ইন্সটিটিউট (বর্তমানে সরকারি সিটি কলেজ ) এ শিক্ষার্থী ছিল মুন্না ও উষা। দুই জন এক বছরের সিনিয়র-জুনিয়র। কলেজ জীবনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দুইজন।
প্রেমের সম্পর্ক থেকে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারী তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের বছর খানেক পর থেকেই তাদের পারিবারিক জীবনে টানাপোড়ন শুরু হয়। উষা ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার সুবাদে বেশিরভাগ সময় ঢাকায় থাকতো আর মুন্না প্রথমে কুমিল্লায় একটি প্রাইভেট কোম্পানী চাকুরী করলেও পরে চাকুরী ছেড়ে কুমিল্লায়ই ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করে। দিনদিন তাদের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরে।
নিহত মুন্নার পরিবারের অভিযোগ করেন, উষা ঢাকায় সোহেল নামের এক ছেলের সাথে পরোকীয়া সর্ম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে মুন্নাকে বিভিন্ন ভাবে মানসিক নির্যাতন করত। চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারার অজুহাতে মরে যাওয়া কথা বলে কটাক্ষ করত। এতে মানসিকভাবে মুন্না ভেঙ্গে পড়ে। গত বুধবার সে আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিয়ে স্ত্রীকে ছবি পাঠায় এবং ম্যাসেজ করে।
কিন্তু স্ত্রী উষা এতে কর্নপাত করেনি। কাউকে জানায়নি। বরং উল্টো উসকানিমূলক কথাবার্তা বলেন। এতে মুন্না ক্ষোভে নিজ শোয়ার ঘরে সিলিং ফ্যানের সাথে উড়না পেছিয়ে আত্মহত্যা করে। পরিবারের লোকজন আওয়াজ পেয়ে দরজা ভাঙ্গিয়া তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু ঘটে। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল বাদ যোহর গুধির পুকুরপাড় ঈদগাহ ময়দানে এমরান হোসাইন মুন্না জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এ বিষয় কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আনয়ারুল আজিম জানান, খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্বার করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। পরিবার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।